কোরবানী ঈদ সামনে রেখে উজিরপুরে চামড়া সংরক্ষণ বিষয়ক সভা ও লবণ বিতরণ অনুষ্ঠিত

- প্রকাশের সময়: ০৭:১৩:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫ ৪২ জন পড়েছে
বরিশালের উজিরপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে প্রথমবারের মতো চামড়া সংরক্ষণ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৪ জুন) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আলী সুজা। কোরবানির সময় প্রতিবছর সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে বিপুল পরিমাণ কাঁচা চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার বাস্তবতাকে সামনে রেখে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় অংশগ্রহণ করেন উজিরপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ শহিদুল ইসলাম খান, উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুস সালাম, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা মোঃ কাওছার হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উজিরপুর উপজেলা যুব আন্দোলনের সভাপতি ডিএম আল-আমিন, চামড়া ব্যবসায়ী মোঃ বাদশা সরদার ও মোতালেব হোসেন। উপস্থিত ছিলেন উজিরপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ এমদাদুল কাশেম সেন্টু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন শরীফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ কাওছার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য সরদার সোহেল, সদস্য আহাদ সুমন, সাংবাদিক মোঃ সুমন বালী ও মোঃ মেহেদী হাসান ভূঁইয়া। উজিরপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আঃ রহিম সরদার ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহফুজুর রহমান মাসুমসহ বিভিন্ন মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং-এর শিক্ষক এবং স্থানীয় সামাজিক-রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ইউএনও মোঃ আলী সুজা চামড়া সংরক্ষণের পদ্ধতি, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ব্যবহার, সময়মতো চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার কৌশলসহ নানা বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “প্রতিবছর আমরা লক্ষ করি, চামড়া সময়মতো লবণ দিয়ে সংরক্ষণ না করার কারণে ব্যাপকভাবে নষ্ট হয়। এতে যেমন অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, তেমনি সমাজের অসহায় মানুষদের সহায়তা করতেও ব্যর্থ হই আমরা। সবাইকে এবার থেকেই সতর্ক ও সংগঠিতভাবে কাজ করতে হবে।”
সভা শেষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত মাদ্রাসা, এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং এবং স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীদের মাঝে বিনামূল্যে লবণ বিতরণ করা হয়। ঈদের সময় চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো লবণ। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকট বা অজ্ঞানতার কারণে প্রয়োজনীয় লবণ সংগ্রহে ব্যর্থ হয়। এ সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যেই প্রশাসন এই বছর আগেভাগেই লবণ সরবরাহের উদ্যোগ নেয়।
লবণ বিতরণের সময় ইউএনও আলী সুজা বলেন, “চামড়া সংরক্ষণের ক্ষেত্রে লবণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই, এবছর যেন একটি চামড়াও অবহেলার কারণে নষ্ট না হয়। এজন্য সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।” অংশগ্রহণকারীরা উপজেলা প্রশাসনের এমন সময়োপযোগী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই ধরণের সহায়তা আগে কখনও পাননি তারা। বিশেষ করে মাদ্রাসা ও এতিমখানার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবার সময়মতো লবণ পাওয়ায় তারা চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণে সক্ষম হবেন।
চামড়া ব্যবসায়ীরাও মত দেন, পূর্বে সচেতনতার অভাব এবং লবণের ঘাটতিতে অনেক চামড়া সংগ্রহ করার পরও সংরক্ষণ করা যেত না। এবারের উদ্যোগ যদি নিয়মিত হয় এবং স্থানীয় পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানো হয়, তাহলে ভবিষ্যতে কোরবানির মৌসুমে চামড়ার অপচয় অনেকটাই রোধ করা যাবে।