উজিরপুরের জল্লা ইউনিয়নের ভাউধর ও মাদ্রা গ্রামকে স্মার্ট ইকো-ভিলেজ ঘোষণা

- প্রকাশের সময়: ০৭:২৩:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫ ১০৪ জন পড়েছে
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের ভাউধর ও মাদ্রা গ্রামকে ‘পরিচ্ছন্ন-স্বাস্থ্যকর ও পরিবেশবান্ধব স্মার্ট ইকো-ভিলেজ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২৮ জুলাই সোমবার, বিকেল ৫ টায় ভাউধর কীর্তন আঙ্গিণা মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ইগনিশন কমিটি ও পরিবেশবান্ধব গ্রাম উন্নয়ন কমিটি (ভাউধর ও মাদ্রা), আর সহযোগিতায় ছিল উজিরপুর এপি, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এবং সিআরএসএস।
সিআরএসএস-এর সিডিও জেমস সানী বৈরাগ ‘র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জল্লা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হরনাথ চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কপিল বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিআরএসএস-বরিশালের এপিসি সেতু গোমেজ, বিল গাববাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা চন্দন বিশ্বাস, ফাইন্যান্সিয়াল কো-অর্ডিনেটর খোকন চন্দ্র দে, ওয়ার্ল্ড ভিশনের এপি ম্যানেজার সিলভিয়া ডেইজি, এবং সিআরএসএস-উজিরপুরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার রাকিবুল ইসলাম।
এসময় প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “পরিবেশবান্ধব গ্রাম মানে কেবল পরিচ্ছন্ন রাস্তা বা গৃহস্থালি নয়, এটি একটি সচেতন ও সংগঠিত জীবনধারার মডেল। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ভাউধর ও মাদ্রা গ্রাম একটি টেকসই উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করল।” তিনি আরও বলেন, “এই গ্রামের জনগণ নিজেরাই নিজেদের জীবনমান উন্নয়নে পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে, যা গোটা উপজেলার জন্য একটি অনুকরণীয় উদাহরণ।” অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ইকো-ভিলেজ মূলত একটি সার্বিক মানবিক ব্যবস্থাপনা, যেখানে মানুষের সব কর্মকাণ্ড প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিচালিত হয়।
অনুষ্ঠানে এসময়, পরিবেশবান্ধব গ্রাম সম্পর্কে আলোচনাকালে বলা হয়, “পরিবেশ বান্ধব গ্রাম হলো এমন একটি পরিকল্পিত ও সচেতন সম্প্রদায়ভিত্তিক বসতি, যেখানে মানুষ পরিবেশ, সমাজ ও অর্থনীতির টেকসই চর্চার মাধ্যমে একসাথে বসবাস করে। এখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, দুর্যোগসহনশীল বাসস্থান, পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন ও প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার করে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবন যাপন করা হয়।” বক্তারা বলেন, ইকো-ভিলেজ ধারণায় মানুষ কেবল ভোগ নয়, বরং সংরক্ষণ ও সহাবস্থানের চেতনায় জীবনযাপন করে। ভাউধর ও মাদ্রার মানুষ নিজেরাই বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে এটি বাস্তব করে তুলেছেন।
অনুষ্ঠানে ইগনিশন কমিটি, পরিবেশবান্ধব গ্রাম উন্নয়ন কমিটি, ভিডিএস সদস্য, শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত জনগণ পরিবেশবান্ধব গ্রাম ঘোষণাকে আনন্দ ও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করে। তারা জানান, এ ধরণের উদ্যোগ শুধু একটি এলাকার নয়, গোটা উপজেলার পরিবেশগত উন্নয়ন ও জনসচেতনতার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।
বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, ভাউধর ও মাদ্রার মতো অন্য গ্রামগুলোও পরিবেশবান্ধব গ্রাম হিসেবে গড়ে উঠবে।