সাতলায় হামলার প্রতিবাদে বিএনপি নেতাদের পরিদর্শন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

- প্রকাশের সময়: ১০:৩৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫ ৫২ জন পড়েছে
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের মুড়িবাড়ি এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগপন্থী একটি গোষ্ঠীর সশস্ত্র হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরের পর উত্তাল হয়ে ওঠে সাতলার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন নেতাকর্মী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে তিনটি স্থানে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
প্রথমে হামলার শিকার মুড়িবাড়ি অফিসের সামনে নেতাকর্মীরা জড়ো হন। সেখানে প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে আক্রমণের নিন্দা জানানো হয়। এরপর তারা বিশাল মোটরসাইকেল বহর নিয়ে উত্তর সাতলার বাসতলা মোড়ে যান, যেখানে দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদী বক্তব্য দেওয়া হয়। পরে জনতা বাজারে গিয়েও দলীয় স্লোগান ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সবশেষে আবার বাসতলা হয়ে মুড়িবাড়ি অফিসে এসে তারা শেষ সমাবেশ করেন।
এই বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন সাতলা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন মোল্লা, প্রকল্পের ক্যাশিয়ার ও কৃষকদল নেতা মোঃ ইউনুস বিশ্বাস, যুবদল নেতা আতিয়ার হাওলাদার, আনোয়ার মিয়া, মোঃ মোস্তফা সরদার, মোঃ সরোয়ার সরদার, মোঃ রাহাত খন্দকার, উজিরপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব পনির খাঁ, ওটরা ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ কামরুজ্জামান টুলু, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আঃ ছত্তার পাইক, সহ-সভাপতি জিয়াবুল মোল্লা, শাহাদাত বিশ্বাস সহ অঙ্গসংগঠনের শত শত নেতাকর্মী।
বিএনপি কার্যালয়ে হামলার ঘটনাস্থল ঘুরে দেখতে আসেন উজিরপুর পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মোঃ শাহাবুদ্দিন আকন সাবু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান লিখন, উপজেলা মৎস্যদলের সাবেক সভাপতি আলম ফকির, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল সিকদার এবং উপজেলা জিয়ামঞ্চের সভাপতি নজরুল ইসলাম।
সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে মোঃ শাহাবুদ্দিন আকন সাবু বলেন, “এই হামলা শুধু একটি কার্যালয়ের উপর নয়—এটা আমাদের রাজনীতি, আমাদের বিশ্বাস, আমাদের দলের অস্তিত্বের উপর সরাসরি আঘাত। যারা আমাদের দমন করতে চায়, তারা ভুল করেছে। আমরা প্রস্তুত আছি প্রতিরোধের।”
মনিরুজ্জামান লিখন বলেন, “বিএনপি যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখনই এই ভয়ংকর আক্রমণ। এই হামলার মাধ্যমে তারা আবারও প্রমাণ করল—তারা চায় না দেশে গণতন্ত্র থাকুক। কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীরা ভয় পায় না, পিছু হটে না।”
অন্য বক্তারা বলেন, “দলীয় অফিসে হামলা, চুরি, ছবিতে পদদলিত করার মত আচরণ রাজনৈতিক সন্ত্রাস ছাড়া কিছু নয়। প্রশাসনের একাংশের নীরবতা এই সন্ত্রাসীদের সাহস বাড়িয়ে তুলেছে। আমরা সারা উপজেলায় প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।”
তারা দাবি করেন, সাতলা এলাকায় দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে একটি প্রভাবশালী মহল বিএনপির কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে আসছে। ২০২৪ সালের আগস্টে সরকার পতনের পর বিএনপির নেতাকর্মীরা আবার সংগঠিত হয়ে উঠলে ওই মহলটি দমননীতি গ্রহণ করে ভয়ভীতি ও হামলার পথ বেছে নিয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতারা দৃপ্ত কণ্ঠে বলেন, “দলীয় অফিসে হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। প্রতিটি হামলার জবাব দেয়া হবে—রাজপথে, রাজনৈতিকভাবে।”