সাতলায় ধানী জমিতে মাছের ঘেরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা

- প্রকাশের সময়: ০৯:১৪:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫ ৯৫ জন পড়েছে
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের আলামদী গ্রামে ধানী জমিতে জোরপূর্বক মাছের ঘের করার উদ্যোগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী জমির মালিক ও কৃষকরা একাংশ। ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে, এবং রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আলামদী গ্রামের ৯ শত বিঘা জমিতে শত বছর ধরে ধান চাষ করে আসছেন ভূমির প্রকৃত মালিকরা। সম্প্রতি ওই জমির একটি অংশ দখলে নিয়ে মাছের ঘের করার চেষ্টা করছেন এলাকার প্রভাবশালী মহল-যাদের মধ্যে রয়েছেন মোঃ বাদশা হাওলাদার, মোঃ রহিম বিশ্বাস, মোঃ জলিল বিশ্বাস, মোঃ জব্বার হাওলাদার ও মোঃ সেলিম বিশ্বাসসহ আরও কয়েকজন।
তারা গত ২৩ জুন সকাল ১০টায় ঘের তৈরির উদ্দেশ্যে বাঁশ ও চালি ব্যবহার করে জমি ঘেরা শুরু করেন। এরই প্রতিবাদে জমির মালিকদের অপর অংশ, মোঃ কবির খানের নেতৃত্বে, তাৎক্ষণিকভাবে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
মিছিলে অংশগ্রহণ করেন লিয়াকত খান, ফিরোজা বেগম, হাজেরা বেগম, নিলুফা বেগম, মোঃ সিরাজ খান, মোঃ হাবিব খান, মোঃ ছালাম খান, মোঃ হানিফ শেখ, মোঃ রুবেল খান, মোঃ জাহাঙ্গীর খান এবং কোটালীপাড়া শুয়াগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তছলিম খানসহ শতাধিক কৃষক।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একাধিক কৃষক জানান, “আমাদের পৈতৃক জমি জোরপূর্বক দখল করে মাছের ঘের করতে চাইছে কিছু প্রভাবশালী। যদি ঘের হয়, তাহলে আমাদের ধান চাষ বন্ধ হয়ে যাবে এবং জীবিকা সংকটে পড়ব। অনেকে আবার বর্ষার মৌসুমে দেশি মাছ ধরে জীবন চালায়, শাপলা-শালুক তুলে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে-এই ঘের এই সমস্ত হত-দরিদ্রদের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হবে।”
বিক্ষোভকারীরা আরও জানান, ঘের নির্মাণ বন্ধের দাবিতে দ্রুত বরিশাল জেলা প্রশাসক, উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উজিরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে।
এ বিষয়ে সাতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ মেজবা উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হালিম বলেন, “আমরা বিষয়টি জেনেছি। দুই পক্ষের সাথে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।”
এলাকার সাধারণ মানুষ মনে করছেন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। দীর্ঘদিনের ফসলি জমি ঘেরের আওতায় চলে গেলে এলাকার কৃষি, অর্থনীতি ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।