ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উত্তর সাতলা পটিবাড়ি মৎস্য প্রকল্প’ উদ্বোধন, দ্বন্দ্ব শেষে শান্তিপূর্ণ সমঝোতা

নুরল ইসলাম আসাদ (স্টাফ রিপোর্টার)
  • প্রকাশের সময়: ০২:৫২:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫ ১৮৯ জন পড়েছে

উত্তর সাতলা পটিবাড়ি ৯নং ওয়ার্ড মৎস্য প্রকল্পে মাছ ছাড়ছেন জমির প্রকৃত মালিকগণ

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ‘পটিবাড়ি স্বাধীন মৎস্য প্রকল্প’ এখন নতুন নাম নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। এই প্রকল্পটির নতুন নাম হল “উত্তর সাতলা পটিবাড়ি ৯নং ওয়ার্ড মৎস্য প্রকল্প”। এটি এলাকার স্থানীয় জমির মালিকদের উদ্যোগে এবং বিএনপির সহযোগিতায় শুরু হয়। তবে উদ্বোধনের পরপরই দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যা উপজেলা স্থানীয় বিএনপ‘র নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে সমাধান করা হয়।

গত ১১ মে রবিবার সকাল ১০টায় মিলাদ ও দোয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন আনোয়ার মিয়া ও মোঃ মোস্তফা সরদার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকৃত জমির মালিকগণ দীর্ঘ ১৬ বছর পর তাদের জমির দখল ফিরে পেয়ে একত্রিত হয়ে মৎস্য প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। তবে, উদ্বোধনের কিছু সময় পরেই অন্য একটি দল মাছ ছাড়ার জন্য ওই ঘেরে প্রবেশ করতে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বিএনপির সদস্যরা উভয় দলের মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদ এবং আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে।

বরিশালের উজিরপুরে মৎস্য প্রকল্প উদ্বোধন দ্বন্দ্ব শেষে একত্রে মাছ চাষে সম্মত স্থানীয় নেতারা
মিলাদ ও দোয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়

আজ ১৩ মে মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় অন্য দলটি ঐ ঘেরে মাছ ফেলতে গেলে উভয় দলের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয় এবং একে অপরকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, যার ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়, যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত রাখে এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শ দেন যাতে অশান্তি না হয়।

এক পর্যায়ে, সিনিয়র বিএনপি নেতাদের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ একত্রিত হয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়। তারা উভয় পক্ষ পরস্পরের মধ্যে মতবিরোধ মিটিয়ে প্রকল্পটি পরিচালনা করতে সম্মত হয় এবং মাছ ছাড়ার কাজ আবার শুরু হয়। প্রকল্পটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কয়েক শতাধিক স্থানীয় ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, আজ আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় সাড়ে ৪ (চার) লক্ষ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছেড়েছি এবং ভবিষ্যতে আরও ২০-২৫ লক্ষ টাকার পোনা মাছ ওই ঘেরে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পটি শুধু অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি এলাকার বেকারত্ব দূরীকরণেও সহায়ক হবে। তারা আশাবাদী যে, প্রকল্পটি এলাকার জন্য দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন আনবে এবং সেখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মোঃ ফজলুল হক বিশ্বাস এপিপি (যুগ্ম আহব্বায়ক, যুবদল, উজিরপুর উপজেলা), মোঃ জাকির খন্দকার (সভাপতি-৯নং ওয়ার্ড, সাতলা, বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী), মোঃ আতাহার বিশ্বাস (সভাপতি-৭নং ওয়ার্ড, সাতলা ইউনিয়ন বিএনপি), মোঃ সাহিন সরদার, স্বপন ফকির, মোঃ মামুন ফকির, মাওলানা মোঃ মোজাম্মেল হক বালী, মোঃ লাল মিয়া হাওলাদার, এমদাদ বিশ্বাস, নান্না মিয়া, মামুন সরদার, আরিফ সরদার, মাওলা পাইক, আব্দুল হাই মিয়া, অমল বৈদ্য।

এছাড়াও আরও অনেক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের প্রত্যাশা ছিল যে, এই প্রকল্পটি এলাকার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

“এই প্রকল্পটি এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং আমাদের জীবিকার জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবে। আমরা চাই, প্রকল্পটি সঠিকভাবে পরিচালিত হোক এবং এটি যাতে এলাকার মানুষের জন্য কল্যাণকর হয়ে ওঠে।”

উপস্থিত নেতারা আরও উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যতে প্রকল্পের আওতায় আরো বড় পরিসরে মাছ চাষ হবে এবং এতে করে দেশের উন্নয়নে আমরা কিছুটা হলে অংশগ্রহন করতে পারবো।

নিউজটি শেয়ার করে সকলকে জানিয়ে দিন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

উত্তর সাতলা পটিবাড়ি মৎস্য প্রকল্প’ উদ্বোধন, দ্বন্দ্ব শেষে শান্তিপূর্ণ সমঝোতা

প্রকাশের সময়: ০২:৫২:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ‘পটিবাড়ি স্বাধীন মৎস্য প্রকল্প’ এখন নতুন নাম নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। এই প্রকল্পটির নতুন নাম হল “উত্তর সাতলা পটিবাড়ি ৯নং ওয়ার্ড মৎস্য প্রকল্প”। এটি এলাকার স্থানীয় জমির মালিকদের উদ্যোগে এবং বিএনপির সহযোগিতায় শুরু হয়। তবে উদ্বোধনের পরপরই দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যা উপজেলা স্থানীয় বিএনপ‘র নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে সমাধান করা হয়।

গত ১১ মে রবিবার সকাল ১০টায় মিলাদ ও দোয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন আনোয়ার মিয়া ও মোঃ মোস্তফা সরদার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকৃত জমির মালিকগণ দীর্ঘ ১৬ বছর পর তাদের জমির দখল ফিরে পেয়ে একত্রিত হয়ে মৎস্য প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। তবে, উদ্বোধনের কিছু সময় পরেই অন্য একটি দল মাছ ছাড়ার জন্য ওই ঘেরে প্রবেশ করতে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বিএনপির সদস্যরা উভয় দলের মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদ এবং আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে।

বরিশালের উজিরপুরে মৎস্য প্রকল্প উদ্বোধন দ্বন্দ্ব শেষে একত্রে মাছ চাষে সম্মত স্থানীয় নেতারা
মিলাদ ও দোয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়

আজ ১৩ মে মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় অন্য দলটি ঐ ঘেরে মাছ ফেলতে গেলে উভয় দলের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয় এবং একে অপরকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, যার ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়, যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত রাখে এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শ দেন যাতে অশান্তি না হয়।

এক পর্যায়ে, সিনিয়র বিএনপি নেতাদের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ একত্রিত হয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়। তারা উভয় পক্ষ পরস্পরের মধ্যে মতবিরোধ মিটিয়ে প্রকল্পটি পরিচালনা করতে সম্মত হয় এবং মাছ ছাড়ার কাজ আবার শুরু হয়। প্রকল্পটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কয়েক শতাধিক স্থানীয় ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, আজ আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় সাড়ে ৪ (চার) লক্ষ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছেড়েছি এবং ভবিষ্যতে আরও ২০-২৫ লক্ষ টাকার পোনা মাছ ওই ঘেরে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পটি শুধু অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি এলাকার বেকারত্ব দূরীকরণেও সহায়ক হবে। তারা আশাবাদী যে, প্রকল্পটি এলাকার জন্য দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন আনবে এবং সেখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মোঃ ফজলুল হক বিশ্বাস এপিপি (যুগ্ম আহব্বায়ক, যুবদল, উজিরপুর উপজেলা), মোঃ জাকির খন্দকার (সভাপতি-৯নং ওয়ার্ড, সাতলা, বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী), মোঃ আতাহার বিশ্বাস (সভাপতি-৭নং ওয়ার্ড, সাতলা ইউনিয়ন বিএনপি), মোঃ সাহিন সরদার, স্বপন ফকির, মোঃ মামুন ফকির, মাওলানা মোঃ মোজাম্মেল হক বালী, মোঃ লাল মিয়া হাওলাদার, এমদাদ বিশ্বাস, নান্না মিয়া, মামুন সরদার, আরিফ সরদার, মাওলা পাইক, আব্দুল হাই মিয়া, অমল বৈদ্য।

এছাড়াও আরও অনেক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের প্রত্যাশা ছিল যে, এই প্রকল্পটি এলাকার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

“এই প্রকল্পটি এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং আমাদের জীবিকার জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবে। আমরা চাই, প্রকল্পটি সঠিকভাবে পরিচালিত হোক এবং এটি যাতে এলাকার মানুষের জন্য কল্যাণকর হয়ে ওঠে।”

উপস্থিত নেতারা আরও উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যতে প্রকল্পের আওতায় আরো বড় পরিসরে মাছ চাষ হবে এবং এতে করে দেশের উন্নয়নে আমরা কিছুটা হলে অংশগ্রহন করতে পারবো।