ঢাকা ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিএনপি দমন করতে হামলা চালানো হয়েছে: অভিযোগ সাতলা বিএনপির

নুরল ইসলাম আসাদ (জ্যেষ্ঠো প্রতিবেদক)
  • প্রকাশের সময়: ১০:১০:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫ ৫৩ জন পড়েছে

উজিরপুরে বিএনপি অফিসে সশস্ত্র হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের দৃশ্য

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের মুড়িবাড়ি এলাকায় বিএনপির একটি কার্যালয়ে ভয়াবহ সশস্ত্র হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সাতলা ইউনিয়ন বিএনপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ এরশাদ সরদার বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) উজিরপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত ১১ জুন দুপুর ১২টার দিকে দক্ষিণ সাতলার বাসিন্দা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ মিজান মিয়ার নেতৃত্বে মোঃ রুহুল মিয়া, মোঃ রহমাতুল্লাহ বিশ্বাস, মোঃ মিলন মিয়া, এস রহমান মিয়াসহ আরও ১০-১২ জন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী দলবদ্ধভাবে বিএনপি কার্যালয়ে অনধিকার প্রবেশ করে। হামলাকারীরা লোহার রড, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভেতরে থাকা চেয়ার, টেবিল, আলমারি, ফাইলকেবিনেটসহ আসবাবপত্র ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করে, যাতে আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।

এছাড়া তারা একটি সিলিং ফ্যান, একটি টেলিভিশনসহ আরও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়, যার মূল্য প্রায় ৪০ হাজার টাকা। তবে সবচেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা হচ্ছে—হামলাকারীরা দলের শীর্ষ নেতাদের ছবি ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে তা পদদলিত করে দলীয় মর্যাদা ও ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ লাখ টাকা বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন মোঃ আনোয়ার মিয়া, মোঃ রাহাত খন্দকার, মোঃ জীবন মোল্লা ও মোঃ সাহাবুদ্দিন মিয়া, যারা থানায় সাক্ষ্য দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মোঃ এরশাদ সরদার অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামী লীগপন্থী একটি গোষ্ঠী পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ভয়ভীতির মাধ্যমে বিএনপির কার্যক্রম রোধ করতে চাইছে। হামলাকারীরা এর আগেও নানা নিপীড়নে জড়িত ছিল।”

স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলেন, ১৭ বছর ধরে একটি প্রভাবশালী মহল বিএনপিকে কোণঠাসা করে রাখার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপির রাজনৈতিক ও প্রকল্পভিত্তিক তৎপরতা শুরু হলে তারা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে, এবং হামলা-হুমকি দিয়ে দমননীতি চালু রাখার চেষ্টা করছে।

উজিরপুর থানার ওসি জানান, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় বিএনপি নেতারা এই হামলাকে ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস’ ও ‘দখলের পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত’ হিসেবে অভিহিত করে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করে সকলকে জানিয়ে দিন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিএনপি দমন করতে হামলা চালানো হয়েছে: অভিযোগ সাতলা বিএনপির

প্রকাশের সময়: ১০:১০:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের মুড়িবাড়ি এলাকায় বিএনপির একটি কার্যালয়ে ভয়াবহ সশস্ত্র হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সাতলা ইউনিয়ন বিএনপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ এরশাদ সরদার বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) উজিরপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত ১১ জুন দুপুর ১২টার দিকে দক্ষিণ সাতলার বাসিন্দা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ মিজান মিয়ার নেতৃত্বে মোঃ রুহুল মিয়া, মোঃ রহমাতুল্লাহ বিশ্বাস, মোঃ মিলন মিয়া, এস রহমান মিয়াসহ আরও ১০-১২ জন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী দলবদ্ধভাবে বিএনপি কার্যালয়ে অনধিকার প্রবেশ করে। হামলাকারীরা লোহার রড, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভেতরে থাকা চেয়ার, টেবিল, আলমারি, ফাইলকেবিনেটসহ আসবাবপত্র ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করে, যাতে আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।

এছাড়া তারা একটি সিলিং ফ্যান, একটি টেলিভিশনসহ আরও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়, যার মূল্য প্রায় ৪০ হাজার টাকা। তবে সবচেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা হচ্ছে—হামলাকারীরা দলের শীর্ষ নেতাদের ছবি ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে তা পদদলিত করে দলীয় মর্যাদা ও ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ লাখ টাকা বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন মোঃ আনোয়ার মিয়া, মোঃ রাহাত খন্দকার, মোঃ জীবন মোল্লা ও মোঃ সাহাবুদ্দিন মিয়া, যারা থানায় সাক্ষ্য দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মোঃ এরশাদ সরদার অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামী লীগপন্থী একটি গোষ্ঠী পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ভয়ভীতির মাধ্যমে বিএনপির কার্যক্রম রোধ করতে চাইছে। হামলাকারীরা এর আগেও নানা নিপীড়নে জড়িত ছিল।”

স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলেন, ১৭ বছর ধরে একটি প্রভাবশালী মহল বিএনপিকে কোণঠাসা করে রাখার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপির রাজনৈতিক ও প্রকল্পভিত্তিক তৎপরতা শুরু হলে তারা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে, এবং হামলা-হুমকি দিয়ে দমননীতি চালু রাখার চেষ্টা করছে।

উজিরপুর থানার ওসি জানান, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় বিএনপি নেতারা এই হামলাকে ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস’ ও ‘দখলের পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত’ হিসেবে অভিহিত করে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।