সাতলায় পটিবাড়ি স্বাধীন মৎস্য প্রকল্পে নিয়মিত মাছ অবমুক্তি; চাষীদের মাঝে আনন্দ-উল্লাস

- প্রকাশের সময়: ০৭:০৬:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫ ৪৯ জন পড়েছে
বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের মুড়িবাড়ি গ্রামে গড়ে ওঠা ‘পটিবাড়ি স্বাধীন মৎস্য প্রকল্প’ এখন স্থানীয়দের কাছে আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দখলে থাকা এই ঘেরের জমি প্রকৃত মালিকদের হাতে ফিরে আসার পর তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং সংগঠিত উদ্যোগে শুরু হয় একটি পরিকল্পিত ও বৃহৎ মৎস্য চাষ প্রকল্প।
প্রকল্পের পরিচালনায় রয়েছেন সভাপতি আনোয়ার মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোস্তফা সরদার, কোষাধ্যক্ষ সরোয়ার সরদার এবং যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ মোঃ রাহাত খন্দকার। তাদের নেতৃত্বে এবং প্রকৃত জমির মালিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণে ঘেরটিকে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের উপযোগী করে তোলা হয়। ফলে এই প্রকল্প শুধু একটি মৎস্যচাষ কার্যক্রম নয়, বরং এটি রূপ নিচ্ছে একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন উদ্যোগে।
গত ১১ মে ২০২৫, রবিবার, আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্পে প্রথম ধাপে প্রায় ২ (দুই) লাখ টাকার বিভিন্ন জাতের পোনা মাছ ছাড়া হয়। এরপর থেকে প্রতিদিনই ধাপে ধাপে মাছ ছাড়া অব্যাহত রয়েছে। আজ ২০ মে মঙ্গলবার সকাল ১০টায়, প্রতিদিনের মতোই প্রায় ৬০-৬৫ মণ মাছ অবমুক্ত করা হয়। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, সামনের দিনগুলোতে আরও প্রায় ১০০ মণ মাছ ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যা মাছের উৎপাদনকে আরও ব্যাপক পরিসরে ছড়িয়ে দিতে সহায়ক হবে।
প্রকল্পের কার্যক্রমে শুধু সদস্যরাই নয়, স্থানীয় যুবসমাজও সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। তারা নিয়মিত ঘেরের পানি, পুষ্টি ও পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করছেন, এবং প্রয়োজনে পরামর্শ নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট মৎস্য কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও। এ যেন শুধুই একটি মাছ চাষ প্রকল্প নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে একটি সমন্বিত সমাজিক উদ্যোগ, যেখানে স্বাবলম্বিতা, দক্ষতা ও দায়িত্ববোধের সমন্বয় ঘটেছে।
ঘেরের প্রকৃত মালিকদের একজন বলেন,
“এই ঘেরটি বহু বছর দখলে ছিল, আমরা ছিলাম বঞ্চিত। এখন আমরা নিজেরা নিজেদের জমিতে চাষ করছি, জীবিকা নির্বাহ করছি। এই প্রকল্প আমাদের পরিবারের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।”
তারা আরও বলেন, “আমরা চাই, এই প্রকল্পকে ঘিরে যেন কোনো ধরণের ষড়যন্ত্র বা বিঘ্ন না ঘটে। এজন্য উপজেলা প্রশাসন এবং এলাকার সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃত্ব, বিশেষ করে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে সহযোগিতা ও সজাগ দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।”
এলাকাবাসীর মতে, সাতলা পটিবাড়িতে এই প্রথম এত বড় পরিসরে, সংগঠিতভাবে ও সুশৃঙ্খলভাবে মাছ চাষ কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পরিবারের আয় বৃদ্ধি, এবং মৎস্যসম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করার যে প্রয়াস এখানে শুরু হয়েছে, তা প্রশংসনীয়।