নির্বাচন পেছানোর অপচেষ্টা চলছে: জাতীয় প্রেস ক্লাবে আমীর খসরু

- প্রকাশের সময়: ০৪:২১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫ ১০৮ জন পড়েছে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনিশ্চয়তা এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন-যারা নির্বাচনের ভয় পায়, তারাই নানা অজুহাতে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছে। তারা মনে করছে, নির্বাচন পেছালে কিছুটা সময় নিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে নেবে। তিনি অভিযোগ করেন, এই অপচেষ্টায় তারা ‘প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে।
গত শনিবার, ১২ জুলাই, রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে “অপূর্ণ জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাসদ।
আমীর খসরু আরও বলেন, “দেশের প্রকৃত মালিক হলো জনগণ। সুতরাং তাদেরকেই সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। কোনো কমিশন বা নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। দেশের মানুষকে তার সমস্যা সমাধান করতে হবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। যে পরিমাণ জাতীয় ঐকমত্য ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে, তা নিয়েই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যেতে হবে। এর বাইরে আর কোনো নাটক বা কালক্ষেপণের সুযোগ নেই।”
সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার ইচ্ছা করলেই ৩-৪ মাসের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়া অনিশ্চয়তায় ও দোলাচলে থাকলে তা নৈরাজ্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে।”
গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জাতি জানতে চাইছে—কবে, কখন নির্বাচন হবে? কিন্তু সরকার শুধু কানামাছি খেলা খেলছে। এর মধ্যেই একটি ‘কিংস পার্টি’ও বানিয়ে ফেলেছে। এভাবে জাতির সঙ্গে তামাশা বন্ধ করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, “সরকার যেভাবে বলছে, সেভাবেই নির্বাচন হবে কি না—এ নিয়ে জনগণের মনে এখনও গভীর সন্দেহ রয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণাকেও অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখছে।”
আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য করিম শিকদার। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন।
এ ছাড়া সভায় উপস্থিত থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। তাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুদ্দিন স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইউম, বাসদের সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদক আবু সাঈদ খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. সোহেল আহমেদ, দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সালেহউদ্দিন, বিলস্-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা অভিন্ন সুরে বলেন-দেশের জনগণের ভোটাধিকার এবং গণতান্ত্রিক চর্চাকে কার্যকর করতে নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নেই। সভায় বক্তারা রাজনৈতিক ঐকমত্যের আহ্বান জানিয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।