উজিরপুরে মাছের ঘের দখল নিয়ে সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা মিন্টু মিয়া মুমূর্ষু অবস্থায়

- প্রকাশের সময়: ১০:৫৬:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫ ১৬৮ জন পড়েছে
এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ সাতলা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মিজান মিয়া ও তাঁর বাহিনীর সঙ্গে ‘সততা মৎস্য ঘের’-এর প্রকৃত মালিকদের বিরোধ চলছিল। স্থানীয় আওয়ামী লীগ-সমর্থিত একটি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে ঘেরটি দখলে রাখার পর সম্প্রতি প্রকৃত জমির মালিকরা ঘেরটি দখলমুক্ত করে সম্মিলিতভাবে মৎস্য চাষ শুরু করেন। ঘেরটিতে ইতোমধ্যে প্রায় ২৭শ মন বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ ছাড়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের অভিযোগ, ১১ জুন বুধবার সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ মিজান মিয়ার নেতৃত্বাধীন একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী সাতলা মুড়িবাড়িতে ‘সততা মৎস্য ঘের’-এর অফিসে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ঘেরের সভাপতি ও সাতলা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিন্টু মিয়াসহ ৬ জন গুরুতর আহত হন। মিন্টু মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া আহতদের মধ্যে শাহাদাৎ বিশ্বাস, ইউনুস বিশ্বাস, রিপন হাওলাদার, সুখচান সমাদ্দার ও সুদেব সমাদ্দারকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারীরা রামদা, দা, লাঠি-সোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা মাছের ঘেরের অফিস কক্ষ ভাংচুর করে, নগদ টাকা, মোবাইল সেট ও অন্যান্য আসবাবপত্র লুট করে এবং মাছের ঘেরে থাকা সামগ্রী ও সীমানা পিলারও ভেঙে ফেলে। ঘটনায় প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মৎস প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা।
ঘটনার দিন বিকেলে আহতদের একজন মোঃ কাঞ্চন মোল্লা বাদী হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় দক্ষিণ সাতলা’র মোঃ মিজান মিয়াকে প্রধান আসামি করে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে হামলার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্ররোচনা, হত্যাচেষ্টা, মারধর, লুটপাট ও অফিস ভাংচুরের ধারায় মামলা করার দাবি জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ‘সততা মৎস্য ঘের’ নামে পরিচিত এই প্রকল্পটি স্থানীয় বহু পরিবারের জীবিকার উৎস। জমির প্রকৃত মালিকরা দাবি করেছেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের ছত্র-ছায়ায় থেকে একটি গোষ্ঠী দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে জোরপূর্বক ঘেরটি দখল করে রেখেছিল। ৫ আগষ্ট ২০২৪ এ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পালিয়ে গেলে, ঘেরটি পুনর্দখলমুক্ত করার পর থেকেই বিভিন্ন হুমকি-ধামকির সম্মুখীন হচ্ছেন।
আহতদের পরিবার ও স্থানীয়রা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।