টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মাদকের ভয়াল ছোবল, শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে

- প্রকাশের সময়: ০৬:৫৬:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ ১৮ জন পড়েছে
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় দিনে-রাতে অবাধে চলছে মাদকের ব্যবসা। উপজেলার অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক পর্যন্ত কোথাও যেন নিরাপদ নয়। দিনের আলো হোক বা রাতের অন্ধকার—প্রকাশ্যে চলছে মাদক কেনাবেচা, মাদক সেবন। এতে আতঙ্কিত ও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মির্জাপুর উপজেলা একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানকার স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। এতে করে শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজিসহ বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে মাদক পাচার হচ্ছে। শীর্ষ পর্যায়ের পরিকল্পনায় মাঠপর্যায়ে সক্রিয় রয়েছে খুচরা বিক্রেতারা। কিশোর-তরুণদের মধ্যে নতুন ধরনের মাদকেরও প্রসার ঘটছে। অনেক জায়গায় রাস্তার পাশেই প্রকাশ্যে মাদক সেবন চলছে। খুচরা বিক্রেতারা ঘুরে ঘুরে মাদক বিক্রি করে, আর ক্রেতাদের মধ্যে কিশোর-তরুণসহ নানা বয়সী লোকজনও রয়েছেন।
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, মির্জাপুরের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই সন্ধান মিলছে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীর। দিনে দিনে নেশাগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সমাজে নৈতিক অবক্ষয়, শিক্ষার ক্ষতি এবং নানা সামাজিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
এলাকাবাসীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, এই মাদক চক্র এতটাই প্রভাবশালী ও ভয়ংকর যে, কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। যারা প্রতিবাদ করে, তাদের হুমকি-ধামকি দিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। মাদকের ছোবলে শিশু-কিশোররাও ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গাঁজা ৫০ থেকে ১০০ টাকায় ‘পুরিয়া’ হিসেবে বিক্রি হয়। ইয়াবা রকমভেদে প্রতি পিস ২৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হিরোইনের এক গ্রাম পাইকারি দাম ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। এছাড়া ফেনসিডিলের বোতল ২৫০ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ অবস্থায় স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে দ্রুত এবং কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এর আগেও জড়িতদের নামে মামলা দিয়ে তাদের টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা আরও কঠোরভাবে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয়রা বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক ও সৎ উদ্যোগ ছাড়া মির্জাপুরকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।