উত্তরা’র সেই সাহসিনী শিক্ষিকা মেহেরী এর আত্মত্যাগে কাঁদছে দেশ

- প্রকাশের সময়: ০১:০৩:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫ ৯৬ জন পড়েছে
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিজের জীবন বাজি রেখে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করেছিলেন স্কুলের শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরী (৪৬)। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না। সোমবার (২১ জুলাই) রাতে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান শিক্ষিকা মেহেরীনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার সময় শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে তিনি যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মুহূর্তেই দ্রুত পদক্ষেপ নেন মেহেরীন চৌধুরী। তিনি শিশু শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম থেকে বের করে নিরাপদ স্থানে পাঠানোর চেষ্টা করেন। অনেক শিক্ষার্থীকে হাতে ধরে বাইরে নিয়ে যান। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। আগুনে দগ্ধ হন শরীরের বড় একটি অংশ। এরপর তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
উদ্ধার হওয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, “সেনাবাহিনীর একজন সদস্য আমাদের জানিয়েছেন, ওই শিক্ষিকার কারণে অন্তত ১৫–২০ জন শিক্ষার্থীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। এমন আত্মত্যাগ ভোলার নয়।”
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুলের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে পাইলটসহ এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকেই বার্ন ইউনিটে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরীর এই আত্মত্যাগের গল্প এখন লাখো মানুষের হৃদয়ে আলোড়ন তুলছে। অনেকে বলছেন, তাঁর এই বীরত্বগাথা শিক্ষকের পেশাকে আবারও মর্যাদার উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।