ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: ৭ মে ২০২৫ উত্তেজনা ও সংঘর্ষ বিশ্লেষণ

- প্রকাশের সময়: ১১:০২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫ ২২৯ জন পড়েছে
৬ ও ৭ মে ২০২৫—এই দুই দিন দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক মানচিত্রে এক ভয়ঙ্কর স্মৃতি হয়ে থাকবে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান দ্বন্দ্ব হঠাৎ করেই রূপ নেয় সরাসরি সামরিক সংঘাতে, যা শুধু দুই দেশের মধ্যেই নয়, গোটা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। ৭ মে রাত পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধ পরিস্থিতি প্রাণহানি, সামরিক ক্ষতি এবং কূটনৈতিক উত্তেজনার এক নতুন অধ্যায় সূচিত করেছে।
যুদ্ধের সূত্রপাত ও ভারতীয় অভিযান
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ৬ মে রাতে, যখন জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় একটি পর্যটকবাহী বাসে সন্ত্রাসী হামলায় ৯ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত হন। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর হাত রয়েছে। এর জবাবে ৭ মে ভোরে ভারত ‘অপারেশন সিন্ধুর’ নামে একটি ক্ষেপণাস্ত্র অভিযান চালায়। লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্যে অবস্থিত সন্দেহভাজন জঙ্গি ঘাঁটি।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এই অভিযান ছিল “সুনির্দিষ্ট ও পরিমিত মাত্রার”, যার উদ্দেশ্য ছিল কেবল জঙ্গি অবকাঠামো ধ্বংস করা, সামরিক বা বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু করা নয়। হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত এবং আরও বহু আহত হয়েছে বলে পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ও পাল্টা হামলা
পাকিস্তান এই অভিযানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় এবং একে “সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা” বলে উল্লেখ করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করে, তারা অন্তত তিনটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যার ধ্বংসাবশেষ জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে পাওয়া গেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ দেশ, কিন্তু যদি কেউ যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়, তাহলে আমরা কঠোর জবাব দিতে প্রস্তুত।”
একইদিন, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভারতের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া জানায় এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে।
ক্ষয়ক্ষতির চিত্র
ভারতের ক্ষয়ক্ষতি:
৬ মে অনন্তনাগ, জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটকবাহী বাসে সন্ত্রাসী হামলায় ৯ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত হন।
৭ মে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় সীমান্তবর্তী এলাকায় ৩ জন ভারতীয় সেনা নিহত হন।
কমপক্ষে ১৫-২০ জন আহত, যাদের মধ্যে কয়েকজন সেনা সদস্য।
পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, তিনটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয় — সম্ভবত একটি MiG-29 এবং একটি HAL Tejas (ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি, তবে বিভিন্ন মিডিয়া সূত্রে জানা যায়)।
সীমান্তবর্তী সামরিক স্থাপনাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে গুরুতর নয় বলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি।
জম্মু, পাঞ্জাব ও রাজস্থানে বাঙ্কার প্রস্তুত করা হয়েছে এবং সামরিক অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
দিল্লি, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও জম্মুতে জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
স্কুল, কলেজ বন্ধ, ট্রেন ও বিমান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
সীমান্ত অঞ্চলের বেসামরিক জনগণ আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যায়।
অনেকেই খাদ্য, পানি ও ওষুধ মজুদ করতে শুরু করেন।
ভারতের সামরিক অভিযানে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া মিশ্র।
যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ সংযমের আহ্বান জানিয়েছে।
চীন ও রাশিয়া আলোচনা চালানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতি:
নিহত: অন্তত ২৬ জন, যাদের মধ্যে অন্তত ১০ জন ছিল সন্দেহভাজন জঙ্গি।
আহত: অজস্র আহত—সুনির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি, তবে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে ভিড় লক্ষ করা গেছে।
৪টি জঙ্গি ঘাঁটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে (পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর ও পাঞ্জাবে)।
পাঞ্জাব প্রদেশের একটি সামরিক ট্রেনিং সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কিছু সামরিক যান ও অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংস হয়েছে, তবে পাকিস্তান সরকার এর বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।
পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের তিনটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে (MiG-29 এবং Tejas ধরনের)।
এ ঘটনায় পাকিস্তানের আকাশসীমায় অস্থায়ীভাবে বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয় (লাহোর, ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি)।
সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর বেসামরিক জনগণ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানি মজুদ শুরু করে সাধারণ জনগণ।
রেড অ্যালার্ট জারি ও স্কুল, কলেজ সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে, এবং নিন্দা ও উদ্বেগের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
জনমনে উদ্বেগ ও অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া
ভারত ও পাকিস্তানের সাধারণ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভারতের দিল্লি, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও জম্মুতে জরুরি সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বাঙ্কার প্রস্তুত, স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা এবং ট্রেন ও বিমান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
পাকিস্তানেও লাহোর, ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে সাময়িক বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয় এবং রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। সাধারণ জনগণ খাদ্যদ্রব্য মজুদ করতে শুরু করে এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যায়।
কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া-এই চারটি বড় শক্তি উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব এক বিবৃতিতে বলেন, “পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের ঝুঁকি গোটা বিশ্বকে বিপন্ন করতে পারে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে বলা হয়, “আমরা সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানের প্রয়োজনীয়তা বুঝি, কিন্তু তা যেন সংঘাত উসকে না দেয়।”
চীন উভয় দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনা শুরুর জন্য একাধিকবার মধ্যস্থতা প্রস্তাব দিয়েছে।
বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
এই যুদ্ধ পরিস্থিতি সাময়িক হলেও দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ভারত সরকারের একটি অংশ মনে করে, সীমান্তে জঙ্গি কার্যকলাপের চূড়ান্ত সমাধান ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়। অন্যদিকে পাকিস্তান যুদ্ধের মাধ্যমে নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতকে একঘরে করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরমাণু অস্ত্রধারী এই দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদে বিপজ্জনক হতে পারে। কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজাই হবে একমাত্র বিকল্প।
পরিশেষে বলা যায়, ৬-৭ মে ২০২৫ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি শুধু সীমান্ত সংঘর্ষ নয়, বরং এক বৃহৎ কৌশলগত সংকটের ইঙ্গিত দেয়। সন্ত্রাসবাদ, সীমান্ত অস্থিরতা ও পরমাণু উত্তেজনার মাঝে এই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এখন বড় এক চ্যালেঞ্জের মুখে। এই সংকট যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হলে, তা শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে।
বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে-ভারত ও পাকিস্তান কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করে।