ঢাকা ০১:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাথরঘাটায় যুবদল নেতা নাসির হাওলাদার হত্যায় রাজনৈতিক উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়: ১০:৩৪:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫ ২১৯ জন পড়েছে

পাথরঘাটায় নিহত যুবদল নেতা নাসির ও অন্যতম দুই আসামী

পাথরঘাটায় যুবদল নেতা নাসির হাওলাদার হত্যার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। হত্যা নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে, এবং ছাত্রলীগও এক বিবৃতি দিয়েছে। এ ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে রাব্বি ও হাসানকে নিয়ে আলোচনা চলছে, তবে কোনো সংগঠনই তাদের দায় নিতে চাইছে না।

গত ১ জানুয়ারি পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা নাসির হাওলাদারের ওপর হামলা চালিয়ে তার পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। নাসির পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে ছিলেন। হামলার সময় স্থানীয়রা হাসান ও রাব্বিকে ঘটনাস্থলে দেখতে পায় এবং তাদের বিরুদ্ধে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকার অভিযোগ ওঠে।

পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির নেতা জাহিদ হাসান মোল্লা দাবি করেন, হাসান ও রাব্বি জামায়াতের সহযোগী সদস্য এবং তারা ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াতের নেতারা ছাত্রলীগের দুষ্কৃতকারীদের দিয়ে বিএনপিকে নির্মূল করার চেষ্টা করছে।

এদিকে, ছাত্রলীগের পাথরঘাটা উপজেলা সভাপতি আহমেদ সুজন এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বলেন, “হাসান ও রাব্বি ছাত্রলীগের সদস্য নয়। বিএনপির অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

জামায়াতের পাথরঘাটা শাখার আমির মোহিব্বুল্লাহ হারুন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, হাসান ও রাব্বি জামায়াত-শিবিরের কেউ নয় এবং তাদের গলায় থাকা কার্ডটি ইসলামী আন্দোলনের। একই দাবি করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পাথরঘাটা শাখা সভাপতি এম এস সোহাগ বাদশাহ, যারা জানিয়েছেন, তাদের দল থেকে হাসান ও রাব্বির কোনো সম্পর্ক নেই।

স্থানীয় সূত্র জানায়, হাসান সম্প্রতি অনলাইন জুয়া খেলার জন্য গরু বিক্রি করে এবং নাসিরের কাছে অভিযোগ করেন। সালিসি বৈঠকের পর হাসান সন্তুষ্ট না হয়ে চলে যান, এবং কিছু সময় পর নাসিরকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা পর নাসিরকে হত্যা করা হয়।

স্থানীয় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ আশঙ্কা করছেন যে, রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান মূল ঘাতকদের আড়াল করতে পারে। পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেছেন, “অপরাধী যেই সংগঠনের হোক, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

বরগুনা পুলিশ সুপার ইব্রাহিম খলিল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “হাসান ও রাব্বি ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে কি না তা জানা নেই, তবে আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে তারা শিবিরের কর্মী। নাসির হত্যার ঘটনায় আটজন আসামির মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে।”

নিউজটি শেয়ার করে সকলকে জানিয়ে দিন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

পাথরঘাটায় যুবদল নেতা নাসির হাওলাদার হত্যায় রাজনৈতিক উত্তেজনা

প্রকাশের সময়: ১০:৩৪:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫

পাথরঘাটায় যুবদল নেতা নাসির হাওলাদার হত্যার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। হত্যা নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে, এবং ছাত্রলীগও এক বিবৃতি দিয়েছে। এ ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে রাব্বি ও হাসানকে নিয়ে আলোচনা চলছে, তবে কোনো সংগঠনই তাদের দায় নিতে চাইছে না।

গত ১ জানুয়ারি পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা নাসির হাওলাদারের ওপর হামলা চালিয়ে তার পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। নাসির পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে ছিলেন। হামলার সময় স্থানীয়রা হাসান ও রাব্বিকে ঘটনাস্থলে দেখতে পায় এবং তাদের বিরুদ্ধে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকার অভিযোগ ওঠে।

পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির নেতা জাহিদ হাসান মোল্লা দাবি করেন, হাসান ও রাব্বি জামায়াতের সহযোগী সদস্য এবং তারা ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াতের নেতারা ছাত্রলীগের দুষ্কৃতকারীদের দিয়ে বিএনপিকে নির্মূল করার চেষ্টা করছে।

এদিকে, ছাত্রলীগের পাথরঘাটা উপজেলা সভাপতি আহমেদ সুজন এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বলেন, “হাসান ও রাব্বি ছাত্রলীগের সদস্য নয়। বিএনপির অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

জামায়াতের পাথরঘাটা শাখার আমির মোহিব্বুল্লাহ হারুন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, হাসান ও রাব্বি জামায়াত-শিবিরের কেউ নয় এবং তাদের গলায় থাকা কার্ডটি ইসলামী আন্দোলনের। একই দাবি করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পাথরঘাটা শাখা সভাপতি এম এস সোহাগ বাদশাহ, যারা জানিয়েছেন, তাদের দল থেকে হাসান ও রাব্বির কোনো সম্পর্ক নেই।

স্থানীয় সূত্র জানায়, হাসান সম্প্রতি অনলাইন জুয়া খেলার জন্য গরু বিক্রি করে এবং নাসিরের কাছে অভিযোগ করেন। সালিসি বৈঠকের পর হাসান সন্তুষ্ট না হয়ে চলে যান, এবং কিছু সময় পর নাসিরকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা পর নাসিরকে হত্যা করা হয়।

স্থানীয় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ আশঙ্কা করছেন যে, রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান মূল ঘাতকদের আড়াল করতে পারে। পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেছেন, “অপরাধী যেই সংগঠনের হোক, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

বরগুনা পুলিশ সুপার ইব্রাহিম খলিল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “হাসান ও রাব্বি ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে কি না তা জানা নেই, তবে আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে তারা শিবিরের কর্মী। নাসির হত্যার ঘটনায় আটজন আসামির মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে।”