ঢাকা ০৫:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাগুরায় গভীর নলকূপ বসাতে অতিরিক্ত খরচ ও দুর্নীতির অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময়: ০১:৫৪:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০৬ জন পড়েছে

মাগুরায় গভীর নলকূপ

নিম্নলিখিত রূপে আর্টিকেলটি রিরাইট করা হলো:


মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার আমলশার গ্রামে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে আজাহার শেখের বাড়িতে একটি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। তবে, স্থানীয়দের অভিযোগ, নলকূপ পেতে সরকারি নির্ধারিত খরচ ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা, খাবার এবং বকশিশ দিতে বাধ্য হচ্ছেন আবেদনকারীরা।

আমলশার গ্রামের বাসিন্দা আশরাফুল মণ্ডল অভিযোগ করেন, তার বাড়ির নলকূপে পানি না ওঠায় চৈত্র মাসে তিনি গভীর নলকূপের আবেদন করেন। বরাদ্দ পাওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী তিনি ১০ হাজার টাকা জমা দেন। কিন্তু দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাপে তাকে আরও ৭০০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়।

শ্রমিকরা নলকূপ বসাতে এসে থাকা-খাওয়ার জন্য চাপ দেন। আশরাফুল জানান, সাতজন শ্রমিককে টানা ছয়দিন তিনবেলা খাবার এবং পরে পাঁচ শ্রমিককে একবেলা খাবারসহ ১৫০০ টাকা বকশিশ দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে তার মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার টাকারও বেশি।

একইভাবে আড়ুয়াকান্দী গ্রামের আফজাল হোসেন জানান, ১০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার পাশাপাশি শ্রমিকদের খাবার ও বকশিশ বাবদ আরও ৮ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। তার মতে, নলকূপের কাজের মান ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের, এবং নলকূপ থেকে বের হওয়া পানিতে দুর্গন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মাগুরার চার উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহের একটি প্রকল্পের আওতায় ৬৬টি গভীর নলকূপ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বরাদ্দ পেতে ১০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার কথা। তবে অভিযোগ রয়েছে, কর্মকর্তারা আবেদনকারীদের থেকে অতিরিক্ত ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা আদায় করেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের খাওয়া ও বকশিশ বাবদ আরও ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়।

শ্রীপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইমরান মাহমুদ অমি দাবি করেন, ১০ হাজার টাকার বাইরে কোনো খরচের নিয়ম নেই। নিম্নমানের কাজের অভিযোগে তারা ঠিকাদারদের মৌখিক নোটিশ দিয়েছেন এবং শিগগিরই লিখিত নোটিশ দেবেন।

তবে, ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, দপ্তরের দুই কর্মকর্তা-কর্মচারী নলকূপ বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। তবে তথ্য অধিকার আইনে আবেদনের পরও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তথ্য পেতে ভুক্তভোগীদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাখী ব্যানার্জী বলেন, অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করে সকলকে জানিয়ে দিন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

মাগুরায় গভীর নলকূপ বসাতে অতিরিক্ত খরচ ও দুর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশের সময়: ০১:৫৪:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

নিম্নলিখিত রূপে আর্টিকেলটি রিরাইট করা হলো:


মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার আমলশার গ্রামে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে আজাহার শেখের বাড়িতে একটি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। তবে, স্থানীয়দের অভিযোগ, নলকূপ পেতে সরকারি নির্ধারিত খরচ ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা, খাবার এবং বকশিশ দিতে বাধ্য হচ্ছেন আবেদনকারীরা।

আমলশার গ্রামের বাসিন্দা আশরাফুল মণ্ডল অভিযোগ করেন, তার বাড়ির নলকূপে পানি না ওঠায় চৈত্র মাসে তিনি গভীর নলকূপের আবেদন করেন। বরাদ্দ পাওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী তিনি ১০ হাজার টাকা জমা দেন। কিন্তু দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাপে তাকে আরও ৭০০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়।

শ্রমিকরা নলকূপ বসাতে এসে থাকা-খাওয়ার জন্য চাপ দেন। আশরাফুল জানান, সাতজন শ্রমিককে টানা ছয়দিন তিনবেলা খাবার এবং পরে পাঁচ শ্রমিককে একবেলা খাবারসহ ১৫০০ টাকা বকশিশ দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে তার মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার টাকারও বেশি।

একইভাবে আড়ুয়াকান্দী গ্রামের আফজাল হোসেন জানান, ১০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার পাশাপাশি শ্রমিকদের খাবার ও বকশিশ বাবদ আরও ৮ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। তার মতে, নলকূপের কাজের মান ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের, এবং নলকূপ থেকে বের হওয়া পানিতে দুর্গন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মাগুরার চার উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহের একটি প্রকল্পের আওতায় ৬৬টি গভীর নলকূপ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বরাদ্দ পেতে ১০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার কথা। তবে অভিযোগ রয়েছে, কর্মকর্তারা আবেদনকারীদের থেকে অতিরিক্ত ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা আদায় করেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের খাওয়া ও বকশিশ বাবদ আরও ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়।

শ্রীপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইমরান মাহমুদ অমি দাবি করেন, ১০ হাজার টাকার বাইরে কোনো খরচের নিয়ম নেই। নিম্নমানের কাজের অভিযোগে তারা ঠিকাদারদের মৌখিক নোটিশ দিয়েছেন এবং শিগগিরই লিখিত নোটিশ দেবেন।

তবে, ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, দপ্তরের দুই কর্মকর্তা-কর্মচারী নলকূপ বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। তবে তথ্য অধিকার আইনে আবেদনের পরও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তথ্য পেতে ভুক্তভোগীদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাখী ব্যানার্জী বলেন, অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।