গাজীপুরে পুলিশের সামনে সাংবাদিককে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত

- প্রকাশের সময়: ১০:২২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫ ২৮ জন পড়েছে
গাজীপুরে এক পেশাদার সংবাদকর্মীকে প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে গাজীপুর সদর থানার সামনে এ নির্মম ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা ওই সাংবাদিককে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় পা ও শরীরে একাধিকবার ইট দিয়ে আঘাত করে তাকে থেতলে দেয়। ঘটনার সময় একাধিক পুলিশ সদস্য সেস্থানে উপস্থিত থাকলেও তারা হামলার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা স্থানীয় সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
পুলিশের উপস্থিতিতে ঘটে যাওয়া এই হামলার একটি ভিডিও ‘সমকালীন বার্তা’ সংবাদমাধ্যমের কাছে রয়েছে, যা ওই ঘটনা ভয়াবহভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্বৃত্তরা সাংবাদিকের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়; তাদের মধ্যে একজন তার বুকের ওপর উঠে লাফিয়ে উঠে এবং একপর্যায়ে পায়ের ওপর ইট দিয়ে একাধিকবার আঘাত করে। এসময় সাংবাদিককে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু পুলিশ সদস্যরা নিরবেই ছিল।
আহত সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন ‘দৈনিক বাংলাদেশের আলো’ পত্রিকার একজন পেশাদার কর্মী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর এলাকায় সামাজিক ও অপরাধমূলক খবর সংগ্রহে নিয়োজিত ছিলেন। এ ধরনের নির্মম নির্যাতন তাদের কাজের ক্ষেত্রে বিরাট ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং সাংবাদিক সমাজে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
হামলার পর স্থানীয়রা আহত আনোয়ারকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা জানান, তার পায়ে মারাত্মক জখম রয়েছে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন এবং জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের সাংবাদিক মহল তীব্র প্রতিবাদ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের পাশাপাশি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে গাফিলতির বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও হামলার ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, “ঘটনাটি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার ফলে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তারা বলছেন, যারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল হবে। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।