এসএসসি পরীক্ষার দিন অপহরণ, দুই মাস পর কিশোরী উদ্ধার

- প্রকাশের সময়: ০৭:৩৯:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫ ৫৫ জন পড়েছে
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ করে গাজীপুরে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘ দুই মাস আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে অবশেষে গাজীপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ‘ঝাড়বাড়ী নিউজ’ নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের পরিচালক জাকির হোসেন (৩০) কে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মে মাসে মেয়েটি হঠাৎ নিখোঁজ হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হলে তদন্তে নামে কাহারোল থানা পুলিশ। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় জানা যায়, মেয়েটিকে ফুসলিয়ে নিয়ে গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত জাকির হোসেন তাকে একটি ভাড়া বাসায় আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, জাকির হোসেন প্রথমে প্রেমের সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে তাকে দিনাজপুর থেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে জোর করে বিয়ে করার ভয় দেখিয়ে গাজীপুরে একটি বাসায় আটকে রাখে এবং নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন চালায়। মেয়েটির শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত দুর্বল, তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও কাউন্সেলিংয়ের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় জাকির হোসেনকে গত সপ্তাহে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (২৬ জুলাই) কাহারোল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলায় ধর্ষণ, অপহরণ এবং মেয়েটিকে আটকে রাখার ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে কাহারোল থানা পুলিশ এবং অভিযুক্তকে আদালতের মাধ্যমে দিনাজপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় অধিকারকর্মীরা বলছেন, এই ঘটনা আমাদের সমাজের তরুণ-তরুণীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বিশেষ করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিচয়ের সূত্র ধরে তরুণীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলার প্রবণতা বাড়ছে। এ ধরনের অপরাধ দমনে সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি।
কাহারোল থানার ওসি রুহুল আমিন জানান, “এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি মামলা। আমরা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। ভুক্তভোগী কিশোরীকে মনিটরিং করা হচ্ছে যাতে সে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।” তিনি আরও জানান, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।