বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে প্রস্তুত ট্রায়াথলেট মিশু বিশ্বাস

- প্রকাশের সময়: ১১:২৮:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ ৩৬ জন পড়েছে
বাংলাদেশের ট্রায়াথলন অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র এবং দেশের প্রথম সার্টিফায়েড ট্রায়াথলন কোচ মিশু বিশ্বাস এবার দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও একবার বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বর্তমানে শিকাগো ম্যারাথন এবং আয়রনম্যান ৭০.৩ নিউইয়র্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য কঠোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বাংলাদেশে সীমিত পরিকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও মিশু বিশ্বাস নিজের প্রতিভা, নিষ্ঠা ও পেশাদার মানসিকতা দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। দেশের ট্রায়াথলন খেলাধুলার বিকাশে তিনি এখন এক অনন্য পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় রয়েছেন।
দেশের ভিতরে ও বাইরে মিশুর অগ্রগতি
মিশু বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে বিডি ট্রাই ক্লাব এবং বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক ও সাইক্লিং ক্লাবের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছেন। শুধুমাত্র খেলোয়াড় হিসেবেই নয়, সংগঠক ও প্রশিক্ষক হিসেবেও তার অবদান প্রশংসনীয়।
২০২৩ সালে তিনি আয়রনম্যান অল ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেট র্যাঙ্কিংয়ে জাতীয়ভাবে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। ২০২৪ সালে ইনজুরির কারণে মাত্র একটি রেস—আয়রনম্যান ফিলিপাইন—এ অংশ নিয়ে তিনি জাতীয়ভাবে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।
২০২৩ সালে আয়রনম্যান ব্রাজিল, মালয়েশিয়া এবং ফ্রান্সে আয়োজিত আয়রনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে অসাধারণ পারফরম্যান্সের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০২৪ সালে ‘আয়রনম্যান সিলভার অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত হন। ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আয়রনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দক্ষিণ এশীয় অ্যাথলেটদের মধ্যে তিনি ৪র্থ স্থান লাভ করেন।
রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
খেলাধুলায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার মিশু বিশ্বাসকে ২০১৯ এবং ২০২৪ সালে দু’বার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (President Police Medal) প্রদান করে। এই পদক তার ক্রীড়া জীবনের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর অন্যতম।
সামনে যা আসছে
বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন এবং সেপ্টেম্বর মাসে আয়রনম্যান ৭০.৩ নিউইয়র্ক এবং অক্টোবর মাসে শিকাগো ম্যারাথনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে MAUNA (মোনা) ট্রাই ক্লাব, ক্যালিফোর্নিয়া-এর প্রতিনিধিত্বে কঠোর অনুশীলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মিশু বিশ্বাস বলেন, “আমার লক্ষ্য হলো বিশ্বমানের এন্ড্যুরেন্স প্রতিযোগিতায় পেশাদারভাবে অংশগ্রহণ করা—যেমন আয়রনম্যান ট্রায়াথলন, চ্যালেঞ্জ সিরিজ ও টি ১০০ ট্রায়াথলন রেস। একজন চ্যানেল সাঁতারু হিসেবে ইংলিশ চ্যানেল, জিব্রাল্টার প্রণালি এবং নর্থ চ্যানেলের ওপেন-ওয়াটার সাঁতারও সম্পন্ন করার স্বপ্ন দেখি।”
তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের কারণে আমি এখানকার বাংলাদেশি ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত নতুন প্রজন্মের অ্যাথলেটদের নিয়ে কাজ করতে চাই। একই সঙ্গে দেশের উদীয়মান ট্রায়াথলেটদের অনলাইনে কোচিং দিয়ে প্রস্তুত করতে পারব, যা আমাদের দেশের খেলাধুলাকে নতুন মাত্রা দেবে।”
পৃষ্ঠপোষকতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
মিশু বিশ্বাস জানান, পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স, নাভানা, ফরচুন সহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে তাকে স্পন্সর করে আসছে। এসব প্রতিষ্ঠানের আগামীতেও পাশে থাকার অঙ্গীকার রয়েছে।
বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বে নিয়োজিত এই অ্যাথলেটের সংগ্রাম ও সাফল্য দেশের তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।