প্রবাসে বৈশাখী উৎসব: নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের আয়োজনে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী

- প্রকাশের সময়: ০১:১০:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫ ৬৬ জন পড়েছে
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ এবং রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষে গত ২৭ জুন ২০২৫ শুক্রবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিকেল ৫:৩০টায় কনস্যুলেটের নিজস্ব মিলনায়তনে (৩১-১০ ৩৭তম এভিনিউ, স্যুইট #২০১, লং আইল্যান্ড সিটি, নিউইয়র্ক-১১১০১) অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ কনস্যুলেটের হেড অফ চ্যান্সারি ও কাউন্সিলর ইশরাত জাহান। শুরুতেই তিনি স্বাগত জানান উপস্থিত অতিথিদের এবং অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। এরপর কনসাল জেনারেল এম. মোজাম্মেল হক শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, “নতুন আশা, নতুন উদ্দীপনা আর নতুন প্রতিশ্রুতি নিয়ে নববর্ষ আমাদের মাঝে এসেছে। বিগত দিনের সকল হতাশা, দুঃখ, বেদনা, গ্লানি আর ব্যথাকে পেছনে ফেলে জীবনের জয়গানের বার্তা নিয়ে এসেছে নববর্ষ।”
তিনি আরও বলেন, “হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত বাঙালির সমৃদ্ধ চেতনার মূল প্রেরণা হচ্ছে বৈশাখী উৎসব। এটি বর্ণ, ধর্ম, জাতি নির্বিশেষে বাংলার সকল মানুষের সার্বজনীন উৎসব। প্রবাসেও আমরা এই ঐতিহ্যকে বুকে ধারণ করে একে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। রবীন্দ্র-নজরুল আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতির অমর প্রতীক। তাদের স্মরণে এই আয়োজন প্রবাসের বাঙালি পরিচয়কে সমৃদ্ধ করে।”
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পর্ব। নন্দিত সংগীতশিল্পী রিজিয়া পারভীন, রেশমী মির্জা, তমা সাহা এবং বাউল শিল্পী শাহীন হোসেন সহ একাধিক শিল্পী রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন। বাংলা গানের ঐতিহ্য ও কবিতার ছন্দে অনুষ্ঠানজুড়ে সৃষ্টি হয় এক হৃদয়গ্রাহী আবহ। রবীন্দ্রনাথের প্রেম, প্রকৃতি ও মানবতার গান এবং নজরুলের বিদ্রোহ ও সাম্যের বাণী প্রবাসজীবনের ব্যস্ততা আর দূরত্বকে অতিক্রম করে উপস্থিত শ্রোতাদের হৃদয়ে নতুন করে স্পর্শ করে।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সকলেই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং এমন আয়োজন প্রবাসী প্রজন্মের মধ্যে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের বোধ জাগিয়ে তুলতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়। বিশেষভাবে প্রস্তুত করা রকমারি ও মজাদার বাংলাদেশি খাবারের আয়োজন অতিথিদের মুগ্ধ করে। প্রবাসের মাটিতে এমন বাঙালি স্বাদ-গন্ধে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে একাত্মতা ও সাংস্কৃতিক বন্ধন জোরদার করার লক্ষ্যে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন অব্যাহত থাকবে।