ঢাকা ০২:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অস্ত্রের মুখে স্বামীকে তালাবদ্ধ করে স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টায় মামলা

নুরল ইসলাম আসাদ (জ্যেষ্ঠো প্রতিবেদক)
  • প্রকাশের সময়: ০৫:৪৮:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ ৭২ জন পড়েছে

ছবি: উজিরপুর মডেল থানা, বরিশাল

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের কালিহাতা গ্রামে ঘটে গেছে এক চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। দিনমজুর স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সর্বহারা পার্টির এক নেতার বিরুদ্ধে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য কুখ্যাত ছিলেন।

ভুক্তভোগীর স্বামী মো. নাসির খন্দকার, পেশায় একজন দিনমজুর, স্ত্রীকে নিয়ে কালিহাতা গ্রামে মো. আজিজুল হাওলাদারের ছেলে মো. রাসেল হাওলাদারের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ঘটনার দিন ছিল ২৯ জুন। গভীর রাতে হঠাৎ করে গৌরনদী উপজেলার শাহাজিরা গ্রামের মৃত আনিচ খানের পুত্র ও সাবেক সর্বহারা দলের সক্রিয় সদস্য মো. আলামিন খান এসে তাদের ভাড়াবাড়ির দরজায় নক করেন। দরজা খোলার পর তিনি নাসির খন্দকারকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে ফেলেন এবং তাকে একটি কক্ষে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এরপর তিনি নাসিরের স্ত্রীর সঙ্গে জোরপূর্বক অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা চালান। পরে তার সঙ্গে আরও দুই সহযোগী—উজিরপুর উপজেলার জয়শ্রী গ্রামের মো. ইমাম হাওলাদার এবং একই গ্রামের মো. সহিদুল হাওলাদা-এই অপকর্মে জড়িত ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

ঘটনার পর ভুক্তভোগী নাসির খন্দকার স্ত্রীর সম্মান রক্ষায় ও ন্যায়বিচারের আশায় ১ জুলাই উজিরপুর মডেল থানায় গিয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করতে শুরু করে। এ বিষয়ে কথা বললে নাসির খন্দকার ও তার স্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার সবিস্তারে বর্ণনা দিয়ে বলেন, তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।

এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম সাংবাদিকদের জানান, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা রুজু হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং অনেকেই ঘটনাটিকে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। অনেকের দাবি, যারা অতীতে চরমপন্থি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল, তারা আজও সমাজে ভয়াবহ অপরাধমূলক তৎপরতায় লিপ্ত থেকে সাধারণ মানুষের জীবনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং আইনি প্রক্রিয়ায় কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকেও।

নিউজটি শেয়ার করে সকলকে জানিয়ে দিন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

অস্ত্রের মুখে স্বামীকে তালাবদ্ধ করে স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টায় মামলা

প্রকাশের সময়: ০৫:৪৮:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের কালিহাতা গ্রামে ঘটে গেছে এক চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। দিনমজুর স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সর্বহারা পার্টির এক নেতার বিরুদ্ধে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য কুখ্যাত ছিলেন।

ভুক্তভোগীর স্বামী মো. নাসির খন্দকার, পেশায় একজন দিনমজুর, স্ত্রীকে নিয়ে কালিহাতা গ্রামে মো. আজিজুল হাওলাদারের ছেলে মো. রাসেল হাওলাদারের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ঘটনার দিন ছিল ২৯ জুন। গভীর রাতে হঠাৎ করে গৌরনদী উপজেলার শাহাজিরা গ্রামের মৃত আনিচ খানের পুত্র ও সাবেক সর্বহারা দলের সক্রিয় সদস্য মো. আলামিন খান এসে তাদের ভাড়াবাড়ির দরজায় নক করেন। দরজা খোলার পর তিনি নাসির খন্দকারকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে ফেলেন এবং তাকে একটি কক্ষে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এরপর তিনি নাসিরের স্ত্রীর সঙ্গে জোরপূর্বক অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা চালান। পরে তার সঙ্গে আরও দুই সহযোগী—উজিরপুর উপজেলার জয়শ্রী গ্রামের মো. ইমাম হাওলাদার এবং একই গ্রামের মো. সহিদুল হাওলাদা-এই অপকর্মে জড়িত ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

ঘটনার পর ভুক্তভোগী নাসির খন্দকার স্ত্রীর সম্মান রক্ষায় ও ন্যায়বিচারের আশায় ১ জুলাই উজিরপুর মডেল থানায় গিয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করতে শুরু করে। এ বিষয়ে কথা বললে নাসির খন্দকার ও তার স্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার সবিস্তারে বর্ণনা দিয়ে বলেন, তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।

এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম সাংবাদিকদের জানান, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা রুজু হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং অনেকেই ঘটনাটিকে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। অনেকের দাবি, যারা অতীতে চরমপন্থি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল, তারা আজও সমাজে ভয়াবহ অপরাধমূলক তৎপরতায় লিপ্ত থেকে সাধারণ মানুষের জীবনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং আইনি প্রক্রিয়ায় কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকেও।