বরিশালে বিএনপি সমর্থকদের হামলায় নাগরিক কমিটির সভা পণ্ড, আহত ৫

- প্রকাশের সময়: ১১:১০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭১ জন পড়েছে
বরিশালে বিএনপি সমর্থকদের হামলার কারণে জাতীয় নাগরিক কমিটির সভা পণ্ড হয়ে গেছে। এ ঘটনা ঘটেছে সোমবার সকালে নগরের সদর রোডের বিবির পুকুরের দক্ষিণপাড়ে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নাগরিক কমিটির বরিশাল মহানগর শাখা এই সভার আয়োজন করেছিল।
সভার আয়োজনস্থলের ঠিক পাশেই জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়। বিকেলে নাগরিক কমিটির নেতারা বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বিএনপিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম দেন।
ঘটনার পরপরই নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. মাহমুদা মিতু জানান, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মেট্রোপলিটন পুলিশের পূর্ব অনুমতি নিয়ে তারা বিবির পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে, কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি প্রথমে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ (রেকি) করে যায়। কিছুক্ষণ পর তারা ফিরে এসে সমাবেশ না করার জন্য নির্দেশ দেয়।
বাধাদানকারীরা দাবি করে যে, ওই স্থান দিয়ে তাদের মিছিল যাবে। সমাবেশের স্থান সরিয়ে মিছিলের পথ তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তারা তা মানেনি। একপর্যায়ে, তারা উত্তেজিত হয়ে সমাবেশস্থলে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং চেয়ার ছুঁড়ে মারে।
ডা. মিতু জানান, এ সময় নাগরিক কমিটির সদস্যদের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারা হয় এবং তাকেও কয়েকবার ধাক্কা দেওয়া হয়। হামলায় আহত হয়েছেন জিএম মেহেদি হাসান, রুমা খান, অসিফত, হানজালাসহ মোট পাঁচজন।
ডা. মাহমুদা মিতু জানান, তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে হামলাকারীরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিষয়টি জানাতে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো সাড়া দেননি।
সমাবেশের জন্য আওয়ামী লীগ কার্যালয় সংলগ্ন স্থান বেছে নেওয়ার বিষয়ে মিতু দাবি করেন, নগরের অন্যান্য জায়গাগুলোতে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের কর্মসূচি থাকায় তারা ওই স্থানটি নির্বাচন করেছিলেন। মেট্রোপলিটন পুলিশও সেখানে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়।
এদিকে মহানগর কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে দেখি জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে আওয়ামীপন্থীরা সড়ক আটকে সমাবেশ করছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আমরা তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিই। তবে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।”
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক জানান, ঘটনার সময়ে তিনি এবং দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন। নাগরিক কমিটির সভায় হামলার ঘটনা তিনি পরে শুনেছেন। তবে তার দাবি, ওই ঘটনায় বিএনপির কেউ জড়িত নয়। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, নাগরিক কমিটির সভায় হামলার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।