নাসা মহাকাশে নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করল

- প্রকাশের সময়: ০৪:২৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০৩ জন পড়েছে
নাসা মহাকাশে নতুন এক ইতিহাস তৈরি করেছে। তাদের মহাকাশযানটি সূর্যের সবচেয়ে কাছে গিয়ে এক বিরল কৃতিত্ব দেখিয়েছে। আগে কখনোই নাসার কোনো মহাকাশযান সূর্যের এত কাছে পৌঁছাতে পারেনি। কয়েক দিন যোগাযোগহীন থাকার পর, ২৪ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় মধ্যরাতের পর পার্কার সোলার প্রোব থেকে সংকেত পায় বিজ্ঞানীরা।
মহাকাশযানটি সূর্যের বাহ্যিক বায়ুমণ্ডল, ‘করোনা’, অতিক্রম করে মাত্র ৩৮ লাখ মাইল দূরত্বে পৌঁছায়। এটি সূর্যের এত কাছে পৌঁছানো প্রথম মানবনির্মিত বস্তু। এই অভিযানটি বিজ্ঞানীদের সূর্যের গঠন এবং কার্যপ্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে সহায়তা করবে। মেরিল্যান্ডের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স ল্যাবরেটরির অপারেশন টিম বুধবার রাতে এই সংকেত পেয়েছিল।
এ সংকেতের মাধ্যমে তারা নিশ্চিত হন যে মহাকাশযানটি নিরাপদে আছে। আগামী বছরের প্রথম দিন পার্কার সোলার প্রোব সূর্যের কার্যপ্রক্রিয়া ও অবস্থা সম্পর্কে আরও তথ্য পাঠাবে বলে আশা করা হচ্ছে। নাসা জানিয়েছে, এই অভিযানের উদ্দেশ্য সূর্যের তাপ ও সৌর বায়ুর উৎপত্তি এবং সূর্যের উপাদান কীভাবে অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত হয়, তা আরও গভীরভাবে বোঝা।
নাসা আরও জানিয়েছে, সূর্যের কাছাকাছি এ ধরনের চরম পরিবেশে পার্কার সোলার প্রোব কতটুকু টিকে থাকতে পারবে, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীদের কিছুটা সংশয় ছিল। তবে এটি টিকে গেলে ২৮ ডিসেম্বর গ্রিনিচ মান সময় ৫টায় সংকেত পাঠানোর কথা ছিল। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল বা ১৪ কোটি ৯০ লাখ কিলোমিটার, আর নাসার মহাকাশযানটি ঘণ্টায় ৪ লাখ ৩০ হাজার মাইল (৬ লাখ ৯২ হাজার কিলোমিটার) গতিতে সূর্যের দিকে এগিয়ে চলছে।
এই অভিযানে পার্কার সোলার প্রোবকে ১৮ হাজার ফারেনহাইট (প্রায় ৯৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রা সহ্য করতে হয়েছে। সূর্যপৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৬ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি, তবে সূর্যের বাইরের বায়ুমণ্ডল, করোনা, এমন কিছু অংশ রয়েছে যেখানে তাপমাত্রা মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়। নাসার বিজ্ঞান শাখার প্রধান ড. নিকোলা ফক্স বিবিসিকে জানিয়েছেন, সূর্য নিয়ে গবেষণা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলছে।
তিনি বলেন, “যতক্ষণ না আপনি কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছাচ্ছেন, ততক্ষণ আপনি তার বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে পারেন না।” পার্কার সোলার প্রোবকে সূর্যের কেন্দ্রের দিকে পাঠানোর উদ্দেশ্য ছিল তার গঠন ও কার্যপ্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা। ২০১৮ সালে উৎক্ষেপিত হওয়ার পর, এই মহাকাশযানটি ২১ বার সূর্যকে পাশ কাটিয়ে আরও কাছাকাছি পৌঁছেছে।
সূত্র: বিবিসি ও রয়টার্স